স্বপ্নে টাকা উপহার পেতে দেখলে কি হয়

স্বপ্নে টাকা উপহার পেতে দেখলে কি হয়

হজরত আবু সাঈদ খুদরি রা. বলেন, নবী করিম সা. বলেছেন, তোমাদের কেউ যদি এমন কোনো স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে।

মুফতি আবদুল্লাহ তামিম৩ মিনিটে পড়ুন

যেমন, শয়তানের খেলা যা দিয়ে কাউকে ভারাক্রান্ত করে তোলে। ফলে সে দেখে যে তার মাথা কেটে ফেলা হয়েছে। সে সেই কাটা মাথার অনুসরণ করছে; অথবা সে এমন কোনো সংকটে পড়েছে যা থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য কোনো সাহায্যকারী পাচ্ছে না। কিংবা সে দেখল যে, ফেরেশতারা তাকে কোনো হারাম কাজ করতে বলছে; অথবা এসব বিষয় যা সাধারণত অর্থহীন। এসব অর্থহীন স্বপ্ন। (ফাতহুল বারি ১২/৩৫২)

সত্য ও ভালো স্বপ্ন দেখলে আল্লাহর পক্ষ থেকে মনে করা ও আল্লাহর শুকরিয়া করা। আর মন্দ স্বপ্ন দেখলে শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। হজরত আবু সাঈদ খুদরি রা. বলেন, নবী করিম সা. বলেছেন, তোমাদের কেউ যদি এমন কোনো স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে।

সুতরাং তার উচিত আল্লাহর প্রশংসা আদায় করা ও অন্যদের স্বপ্ন সম্পর্কে বলা। কিন্তু সে যদি এমন স্বপ্ন দেখে যা সে অপছন্দ করে তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। সুতরাং তার উচিত এর ক্ষতি থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাওয়া। কাউকে এ স্বপ্ন সম্পর্কে না বলা। এমন করলে তার কোনো ক্ষতি হবে না। (বুখারি ৬৫৮৪; মুসলিম ৫৮৬২)

আরও পড়ুন: স্বপ্নে নিজের বিয়ে দেখলে কী হয়

স্বপ্ন বিশারদ ইবনে সিরিন রহ. একজন ব্যক্তির স্বপ্নে টাকা দেখা সম্পর্কে বলেছেন, স্বপ্নে টাকা দেখা খারাপ কোনো কিছুর প্রতি ইঙ্গিত বহন করে না। এটা আনন্দময় কিছু হতে পারে। সে যদি অবসর থাকে তার ব্যস্ততার ইঙ্গিত দেয়। অবশ্যই সে যদি আমল ইবাদতে মন না থাকে, তাকে মন দিতে হবে। নামাজ ও ফরজ ইবাদতগুলোর প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। দীনের শিক্ষা না থাকলে দীনের শিক্ষা অর্জন করা উচিত। দায়িত্ব পালনে তার প্রতিশ্রুতিতে ব্যর্থ হওয়া উচিত নয়।

যদি একজন ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে দেখে যে সে একটি উঁচু জায়গা থেকে টাকা সংগ্রহ করছে আর তার কাছে পৌঁছানো কঠিন মনে হয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে টাকা নিতে সক্ষম হয়, এটি তার লক্ষ্যে পৌঁছানোর ক্ষমতার লক্ষণ যা সে চেষ্টা করে যাচ্ছে। তার জীবনে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা তাকে সুখের অনুভূতি দিবে।

ঘুমের মধ্যে যা কিছুই মানুষ দেখে এর মাধ্যমে দুনিয়া আখেরাতের কোনো কিছুই প্রমাণিত হয় না। ঘুমের মাঝে মানুষ কত কিছুই করে। এর মাধ্যমে যেমন দুনিয়ার কোনো কিছু অর্জিত হয় না। তেমনি শরিয়া কোনো বিধানও আরোপিত  হয় না। সেই হিসেবে ঘুমের মাঝে আপনি যত ইচ্ছে খাবার খান, এতে যেমন আপনার পেট ভরে না, তেমনি রোজাও ভাঙবে না।

আল্লাহর নবী হজরত ইউসুফ আ.-কে আল্লাহ তাআলা স্বপ্ন দেখিয়েছেন। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘স্মরণ করো, ইউসুফ তার পিতাকে বলেছিল, হে আমার পিতা, আমি তো দেখেছি ১১টি নক্ষত্র, সূর্য ও চন্দ্র। আমি দেখলাম তারা আমাকে সিজদা করছে। তিনি বলেন, হে আমার বৎস, তোমার স্বপ্নবৃত্তান্ত তোমার ভাইদের কাছে প্রকাশ করো না।’ (সুরা: ইউসুফ, আয়াত ৪-৫)

পবিত্র কোরআনে মিশরের অধিপতির স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যাকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(মিশরের) অধিপতি বলেছিল, আমি দেখেছি সাতটি মোটা গাভি, যাদের সাতটি শীর্ণকায় গাভি খেয়ে ফেলল এবং সাতটি সবুজ শস্যের শিষ ও সাতটি শুষ্ক। হে প্রধানরা, যদি তোমরা আমার স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে পার তবে স্বপ্নের তাৎপর্য বলো।’ (সুরা: ইউসুফ, আয়াত ৪৩)

রাসুল সা.-কে আল্লাহ তাআলা বদরের যুদ্ধের আগে স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘স্মরণ করুন, তোমার স্বপ্নে আল্লাহ তোমাকে দেখিয়েছিলেন যে তারা সংখ্যায় স্বল্পসংখ্যক। যদি তিনি তোমাকে দেখাতেন যে তারা সংখ্যায় অধিক, তবে তোমরা নিশ্চয়ই সাহস হারাতে। অবশ্যই তোমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিতর্কে লিপ্ত হতে। কিন্তু আল্লাহ (তোমাদের) রক্ষা করেছিলেন, যেহেতু তিনি সবার হৃদয়ের কথা বিশেষভাবে অবহিত।’ (সুরা: আনফাল, আয়াত ৪৩)
 

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *